ইতিহাসে পাকুন্দিয়াঃ
"এগারসিন্দুর আর দগদগা স্থানে
বাণিজ্য বিখ্যাত ইহা সর্বলোকে জানে
নানা দেশী আসয়ে এতায়
বেচা- কেনা করে সঙ্গে আনন্দ হিয়ায়"
এককালে এ পাকুন্দিয়া উপজেলার উত্তাল ব্রহ্মপুত্র নদ বিদৌত এগারসিন্দুর, দগাদগা, মির্জাপুর, দরদরা, মঠখোলা, বাহাদিয়া এবং নগরহাজরাদী প্রভৃতি এলাকায় বাণিজ্য কেন্দ্র ছিল। এখানে খরস্রোতা ব্রহ্মপুত্র নদের ধারে ভিনদেশী বণিক, সওদাগরগণের বাণিজ্য তরী রাজবাজবাদের সৈন্য সামন্ত এবং আমীর ওমরাহগণের পদচরনায় এ জনপদ ছিল মুখরিত। খ্রীষ্টিয় সপ্তক দশকে চৈনিক পরিব্রাজক ইউয়েন সাঙ্গ এর জীবন বৃত্তা থেকে জানা যায় সমুদ্র থেকে নব উত্থিত এ ভূভাগ ছিল ঘনঅরণ্য বেষ্টিত। অরন্যবাসী পাহাড়ী জনগণ এসে এখানে বসতি স্থাপন করতে থাকলে নবম/দশম শতকে এখানে ক্ষুদ্র গোত্র যেমন- কোচ, গারো, হাজং, অহম, মেচ প্রভৃতি সামন্ত রাজ্যের অধীনে এককেটি এলাকা দুর দুর রাজ্য হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। বিভিন্ন কারণে এসব সামন্ত রাজাদের মধ্যে অন্তঃ কলহ লেগেই থাকত।
পাকুন্দয়িার নাম রুপ
"পাকুয়ান দেহ" থেকে পাকুন্দিয়া
পাকুন্দিয়া বাজারের দক্ষিনাংশে মির্জাপুর-পাকুন্দিয়া রোডের পশ্চিমপার্শ্বে মলং শাহ নামে একজন আউলিয়া দরবেশের মাজার আছে। তিনি মধ্যযুগে এ এলাকায় ইসলাম ধর্ম প্রচারের জন্য এসেছিলেন। কেউ কেউ বলেন তিনি এগার সিন্দুরে আগত ১১জন আউলিয়ার অন্যতম একজন ছিলেন। বর্তমান মাজার স্থলে তিনি অবস্থান করতেন। এই মলংশাহ দরবেশের পাকুন(পবিত্র)+দেহ থেকে "পাকুয়ান দেহ" অর্থাৎ উর্দু ভাষী শব্দে 'পাকওয়ান দেহ' যা লোকমুখে উচ্চারণ বিবর্তনের ফলে পাকুন্দিয়া শব্দে রূপ নেয় এবং এ অঞ্চলের নামকরণ হয় পাকুন্দিয়া।
"পাকুড়" থেকে পাকুন ও "দিয়া"মিলে পাকুন্দিয়া
বহু ভাষাবিদ ও গবেষক ডঃ সুকুমার সেনের মতে 'পাকুন ও দিয়া' এ দ্থুটো শব্দ মিলে এ এলাকার নাম হয়েছে পাকুন্দিয়া। 'পাকুন' অর্থাৎ পাকুড় গাছ'আর "দিয়া' অর্থ দুপাশে নদী বা খাল অর্থাৎ জলাভুমি বেষ্টিত টিলাভূমি বা উঁচু স্থান। তাঁর মতে এই অঞ্চলের দু পাশে খাল-নদী বেষ্টিত উঁচু স্থানে প্রচুর 'পাকুড় গাছ' ছিল। 'পাকুন' শব্দটি 'পাকুড়' শব্দের বিবর্তিত রূপ; এই বিবর্তিত শব্দ পাকুন এবং এখানকার ভৌগলিক পরিবেশ 'দিয়া' মিলে এ এলাকার নামকরণ 'পাকুন্দিয়া' হয়েছে।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস